সংবাদমাধ্যমকে এইদেশে গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে দেখা হয়ে থাকে। কিন্তু বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে সংবাদমাধ্যমের একতরফা বিকৃত মনোভাবের কারণে চতুর্থ স্তম্ভের মর্যাদা হারাতে বসেছে বা হারিয়েছে বলা যায়।
ছলে বলে কলে কৌশলে তারা যেন সবসময় একটা সম্প্রদায়ের মানুষের উপরে খড়গ ঝুলিয়ে রেখেছে। পান থেকে চুন খসলেই তাদের ঘাড়ে নেমে আসে খড়গের কোপ।
গত 24 ঘন্টায় সারা দেশ জুড়ে ভয়ঙ্কর মহামারী করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রায় 100 জন মারা গেছেন। এটি খুবই বেদনাদায়ক সংবাদ।
কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের এই সংবাদটি পরিবেশন করার ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে “জি 24 ঘন্টা” নামের এক সংবাদমাধ্যম তাদের নিউজ পোর্টালে কয়েকজন টুপিধারী মানুষের ছবি আপলোড করেছে।
অথচ সংবাদের সাথে দূর-দুরান্ত পর্যন্ত ছবির কোন সম্পর্ক নেই।

এক্ষেত্রে তাদের মনোভাব টা ঠিক পরিস্কার নয়। নিউজের হেড লাইনে রয়েছে দেশজুড়ে করোনা আক্রান্ত হয়ে 100 মানুষের মৃত্যু অথচ ছবিতে রয়েছে টুপিধারী কিছু মুসলিম। এর দ্বারা তারা দেশবাসীর কাছে কি বার্তা দিতে চাইছে?
ইতিমধ্যে নিজামুদ্দিন নিয়ে সমস্ত প্রপাগণ্ডা মিথ্যা প্রমাণ হয়েছে, এবং অনেক চ্যানেলকে ক্ষমা চাইতে দেখা গিয়েছে। তবলীগ জামাতের সক্রিয় সদস্যরা তাদের দেহের বহুমূল্য প্লাজমা দিয়ে করোনার চিকিৎসায় সহায়ক হয়েছে, সর্বোপরি দেশজুড়ে তাদেরকে ন্যাশনাল হিরোর তকমা দেয়া হয়েছে।
এত কিছুর পরেও 24 ঘন্টার এহেন নিউজ মানুষকে যেমন বিভ্রান্ত করবে ঠিক তেমনি ভাবে সুবিধাবাদী মানুষদের ইসলামোফোবিয়া ছড়াতে সহায়ক হবে।
প্রসঙ্গত উপসাগরীয় দেশগুলো সহ কানাডার মতো দেশেও প্রবাসী ভারতীয়দের জন্য অবস্থা অন্যরকমের হচ্ছে। উপসাগরীয় দেশগুলোতে সামাজিক মাধ্যমে ইসলামোফোবিয়া বিস্তারের অভিযোগে বেশ কয়েকজন প্রবাসী ভারতীয় চাকুরিচ্যুত হওয়ার পর কানাডাতেও এখন একই ধরনের ঘৃণা প্রচারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।
জি-২৪ ঘন্টার প্রতিনিধিকে কল করলে তিনি এব্যাপারে প্রথমে কথা বলতে চাননি,এবং পরে উগ্র আচরণ করে ফোন কেটে দেন।
বিশ্বের সবথেকে বড় গণতন্ত্রের দেশ ভারত বর্ষ, সেই দেশের এত বড় এক মিডিয়া হাউসের প্রকাশ্যে উসকানিমূলক বিবৃতি এবং ঘৃণা চাষ করার জন্য কোন ব্যবস্থা নেয়া হবে না কেন?
লেখক- আলমাস আল ইসলাম